Saturday, March 28, 2020

সর্দিজনিত সমস্যায় হোমিও চিকিৎসা


থেরাপিউটিকস-৫
---------------------------------
করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯
করোনা ভাইরাসের লক্ষণ সর্দিকাশি দিয়েই শুরু হয়। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কোন রোগ ধরে হয় না লক্ষণসমষ্টি নিয়ে আমাদেরর ওষুধ দিতে হয়। শুরুতেই যদি করোনার প্রাথমিক লক্ষণগুলো + রোগীর ব্যক্তিগত লক্ষণ মিলিয়ে হোমিও ওষুধ প্রয়োগ করলে সমস্যা দ্রুতই কমে যায়, সেটা সাধারণ সর্দিকাশিই হোক বা Covid-19 এর কারনেই হোক, সমস্যা আর জটিলতার দিকে যাবে না।
প্রথমে আমরা সর্দিজনিত সমস্যায় বেশি ব্যবহৃত হোমিও ওষুধ সম্পর্কে জানবো।
#রোগের শুরুর ধাপে/প্রাথমিক পর্যায়ে Camphor, Aconite, Nux vom, Bryonia, Belladonna ওষুধগুলো বেশি নির্দেশিত হয়।
- প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে ঠাণ্ডার সংস্পর্শে যাওয়ার পর রোগী যদি মনে করে তার ঠাণ্ডা লাগবে তখন Camphor ০/১, ৬, বা ৩০ শক্তির কয়েকমাত্রা ঘন ঘন প্রয়োগ করলে অসুস্থতা থেকে বাঁচা যায়।
- শুষ্ক ঠাণ্ডার সংস্পর্শে আসার পর যদি জ্বর জ্বর লাগে, রোগীর মধ্যে অস্থিরতা প্রকাশ পায় তখন Aconite প্রয়োগ করতে হয়।
- সারাদিনই জ্বর জ্বর লাগা সাথে নাক বন্ধ, কপালে ব্যথা হলে Nux vomica
- নাক শুষ্ক, বন্ধ, নাকের গোড়াসহ কপালে ব্যথা, সঞ্চালনে/নড়াচড়ায় বাড়ে, ঠোট শুষ্ক, প্রচুর পিপাসা - Bryonia alba
- চোখ মুখ লাল, নাক থেকে সর্দিস্রাব, হঠাৎ রোগের আক্রমন, দপদপানি মাথাব্যথা - Belladonna
#রোগের দ্বিতীয় পর্যায়ে (Second stage), যখন নাক থেকে প্রচুর সর্দিস্রাব হতে থাকে তখন Merc sol, Allium cepa, Arsenic album বেশি নির্দেশিত হয়।
#তৃতীয় পর্যায়ে (Third stage): নাক থেকে ঘন হলুদ সর্দিস্রাব হলে Pulsatilla, Sulphur। মুখের স্বাদ ও নাকে গন্ধ না পেলে পালসেটিলা, ক্রনিক কেইসে Sulphur
#আসুন আরেকটু বিস্তারিতভাবে জানি -
[1] Camphor officinalis :
প্রাথমিক পর্যায়ে বেশি নির্দেশিত হয়। প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়, নাক বন্ধ থাকে, নাক শুষ্ক, সুচালো। কপালে ব্যথা করে, গলাব্যথা। ওষুধটি পানির সাথে মিশিয়ে ঘন ঘন প্রয়োগ করলে (Camphor 6, 2 hourly) এবং যথাসময়ে দিতে পারলে কয়েক ডোজেই রোগী ভাল হয়ে যায়।
ডা: টাইলার বলেন যে কারো যদি শরীর ঠাণ্ডা হয় (ঠাণ্ডার সংস্পর্শে গিয়ে বা যেকোন ভাবে), শরীর এখনো গরম হয়নি, সর্দিস্রাব এখনো দেখা দেয় নি তবে Camphor টিংচার চিনির সাথে মিশিয়ে শরীর গরম না হওয়া পর্যন্ত ঘন ঘন খেলে আর সর্দি দেখা দেয় না।
ক্যাম্ফর টিংচার বহু ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয় তাই এর মাদার টিংচার অন্য ওষুধের সাথে না রেখে অন্য ঘরে রাখতে হবে। (Kent) [তবে উচ্চ শক্তির জন্য এ কথা প্রযোজ্য না]
এ অবস্থা যদি পার হয়ে যায় এবং রোগীতে জ্বর দেখা দেয় তাহলে Aconite দিতে হয়।
[২] Aconitum nap:
শুষ্ক ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে যাওয়ার পরপর জ্বর জ্বর লাগে, প্রথমে শীত করে শরীর ঠাণ্ডা হয়, তারপর প্রচণ্ড জ্বর আসে, গা জ্বরে পুড়ে যায়, ততটা ঘাম থাকে না। মাথাব্যথা করে, নাক থেকে শুরুতে খুব বেশি সর্দিস্রাব হয় না। নাকের গোড়ায় ব্যথা হয়, গলায় জ্বলে খোঁচা মারা ব্যথা হতে পারে। পরবর্তীতে নাক থেকে প্রচুর স্রাব হয়। অস্থিরতা, প্রচুর পিপাসা।
- শুষ্ক ঠাণ্ডার সংস্পর্শে গিয়ে হঠাৎ রোগের আক্রমন।
- নাক শুষ্ক, সর্দি বের হয় না, নাকের গোড়ায় ব্যথা
- খোলাবাতাসে ভাল থাকে, কথা বললে বাড়ে
- পরে, প্রচুর হাঁচি হয়, নাক থেকে গরম স্রাব হতে থাকে। সকালেই বেশি যায়।
- উচ্চ জ্বর, গলা ব্যথা। গলায় জ্বালা ও হুলফোটান ব্যথা।
- কাশি, শুষ্ক, আক্ষেপিক কাশি, রাতে পারে। কাশতে কাশতে গলা বসে যেতে পারে।
- নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস এর শুরুর দিকে এটি নির্দেশিত হয়।
- রোগী ভীত হয়ে পড়ে, উদ্বিগ্নতা ও মৃত্যুভয় দেখা দেয়, খুবই অস্থিরতা প্রকাশ পায়।
- করোনা ভাইরাসের সংবাদে যারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাদের জন্য এ ওষুধে উচ্চশক্তি কাজ দিবে।
[৩] Allium cepa:
- সর্দিস্রাব, নাক ও চোখে থেকে পানি পড়ে, সাথে মাথা ব্যথা করে।
- ঘন ঘন হাঁচি হয়, নাক থেকে যে স্রাব যায় সেটি ক্ষতকারি, নাক ও ঠোটে ঘায়ের মতো হয়ে যায়।
- চোখ থেকেও প্রচুর পানি পড়ে কিন্তু চোখের পানি ক্ষতকর না। (ইউফ্রোসিয়াতে এর উল্টো অর্থাৎ চোখের পানি ক্ষতকর কিন্তু নাকের পানি অক্ষতকর।)
- রোগী গরমকাতর, গরম ঘরে, আবদ্ধ কক্ষে বাড়ে, খোলা বাতাসে উপশম হয়। বিকালে সমস্যা বেশি হয়।
- পিপাসা
- ল্যারিক্স এর প্রদাহ হয়, কাশি দিলে মনে হয় স্বরনালী ছিড়ে যাবে। গলা চেপে কাশি দেয়। [hep, acon, dros, phos] [ML Tyler]
- ঠাণ্ডা বাতাসের নিশ্বাস নিলেই কাশি শুরু হয়।
শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায়ই লাগে। নাকের প্রদাহজনি সর্দি, পরে প্রদাহ স্বরনালী, ব্রঙ্কাসে পৌঁছায়, কাশি দেখা দেয়। শ্বাস-প্রশ্বাসে মিউকাস জমে ঘরঘর শব্দ করে। [T.S. Iyer]
[৪] Belladonna
- আকস্মিক প্রবল রোগাক্রমন।
- নাকের সর্দি অবরুদ্ধ হয়ে প্রচণ্ড মাথাব্যথা করে।
- মুখে ও মাথায় রক্তের প্রাবল্য। চোখ লাল, মুখমণ্ডল রক্তিমাভ।
- মাথা গরম, হাত-পা ঠাণ্ডা।
- দপদপানি ব্যথা। সবকিছুতে যন্ত্রনার প্রাবল্য। যন্ত্রনা হঠাৎ আসে হঠাৎ যায়।
- বুকে সর্দি কম থাকে। গলা শুষ্ক।
- গলা যেন কাঁচা হয়ে গেছে, দেখতে চকচকে লাল।
- শুষ্ক কাশি, গলা ছিড়ে যায়। স্বরনালীর প্রদাহ, স্বরনালী ফুলে যায়, স্বরভঙ্গ দেখা দেয়। খুব ব্যথা করে।
- উচ্চ জ্বর, শুষ্ক। পিপাসা থাকে না।
[৫] Bryonia alba:
- প্রায়ই নাক থেকে শুরু হয়, হাঁচি হয়, নাকের প্রদাহ হয়ে সর্দিস্রাব হয়, চোখ থেকে পানি পড়ে, প্রথম দিন চোখে নাকে, মাথায় ব্যথা হয়। তারপর নাকের পিছনভাগ , গলা, স্বরনালি (larynx), আক্রান্ত হয়। গলা ভেঙে যায়, ব্রঙ্কাইটিস দেখা দেয় পরবর্তীতে প্লুরার প্রদাহ এবং শেষে নিউমোনিয়া দেখা দেয়। [ML Tyler]
- শুষ্ক আক্ষেপিক কাশি, রাতে বাড়ে, পানি পান ও খাওয়ার পর বাড়ে, গরম কক্ষে প্রবেশ করলে বাড়ে, গভীরভাবে শ্বাস নিলে বাড়ে।
- কাশিতে বুকে শুঁই ফোটানোর মত ব্যথা করে, সাথে মাথাব্যথা করে, কাশিতে যেন মাথা ফেটে যাবে এমন লাগে।
- ব্রায়োনিয়ার রোগী, খিটখিটে স্বভাবের, প্রচুর পানি পিপাসা থাকে, চুপচাপ শুয়ে থাকতে চায়, কথা বলতে চায় না।
- সমস্ত মিউকাস মেম্ব্রেন শুষ্ক হয়ে থাকে। ঠোক শুকিয়ে যায়।
- ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ায় বৃদ্ধি।
- Dr. Manish Bhatia, UK এর Society of Homeopath এ ওষুধটিকে COVID-19 এর প্রফাইলেকটিক হিসেবে ব্যবহার করতে বলেছেন।
[৬] Nux vomica:
- এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি ওষুধ। Richard Pitcairn এ ওষুধটিকে বর্তমান করোনা ভাইরাসের প্রতিকার ও প্রতিরোধ ওষুধ হিসেবে সবার আগে বিবেচনা করেছেন।
- ঠাণ্ডার শুরুর পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়। নাক বন্ধ, বা রাতে নাক বন্ধ হয়ে থাকে, দিনের বেলায়, গরম রুমে প্রচুর সর্দিস্রাব হয়। মাথার সামনের দিকে ব্যথা হয়।
- ঠাণ্ডা বাতাসের প্রতি খুবই সংবেদনশীল। গলা ব্যথা।
- খুব শীতকাতর রোগী, সামান্য নড়াচড়ায়, বা গায়ে আবরন সড়ালেই শীতার্ত হয়ে পড়ে। এমনকি প্রবল জ্বরের সময়ও আবৃত হয়ে থাকতে পছন্দ করে, নড়াচড়া করে না।
- একোনাইটের মতো শুষ্ক ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে রোগ দেখা দেয়, একোনাইট উদ্বিগ্ন আর নাক্স খিটখিটে।
- নাক বন্ধ হয়ে প্রচুর হাঁচি হয়, খোলাবাতাসে হাঁচি বাড়ে। খোলাবাতাসের সংস্পর্শে কাঁপতে থাকে। পানি পান করার পরও কাঁপতে থাকে।
- হাত পা, পিঠসহ সারাদেহে শীত লাগতে থাকে, গরম প্রয়োগেও শীত যায় না।
- নাক্স ভম এর রোগী খুব সংবেদনশীল বিশেষ করে, সামান্য বাতাস সহ্য হয় না, খিটখিটে স্বভাবের।
[৭] Mercurius sol:
- শীতে গায়ে কাটা দিয়ে উঠে। বিকালে বাড়ে, রাতে বাড়ে, বিছানায় বাড়ে।
- নাক থেকে পাতলা পানির মতো স্রাব হয়, সাথে হাঁচি। চোখ থেকে পানি পড়ে।
- গলাব্যথা, খোঁচামারা, হুলফোটান ব্যথা, সবসময় ঢোক গিলতে হয়, মুখে অনেক লালা জমে যায়।
- মুখ, নিশ্বাসে দুর্গন্ধ। লালাও দুর্গন্ধ।
- অল্পজ্বর কিন্তু প্রচুর ঘাম হয়, ঘামে জ্বর কমে না।
- নাকের সর্দি হাজাকর, সবুজাব বা পুজের মতোও হয়।
- গলা বসে যায়, শুষ্ক কাশি, গলায় খুসখুস করে।
- গরম ঘরে বৃদ্ধি পায় কিন্তু আবার ঠাণ্ডাও সহ্য করতে পারে না।
- জিহ্বা মোটা, থলথলে, দাঁতের ছাপ থাকে।
[৮] Gelsemium:
-1918-19 সালের ভয়াবহ স্প্যানিশ ফ্লুতে এ ওষুধটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। Society of Homeopath, UK, ব্রায়োনিয়ার সাথে জেলসিয়াম ওষুধকেও প্রিভেন্টিভ ওষুধ হিসেবে রিকমেন্ড করেছে।
- নিদারুন দুর্বলতা, মাথাঘোরা, শরীর থরথর করে কাঁপে।
- জ্বরের সাথে অল্প পিপাসা থাকে।
- গরম আদ্র আবহাওয়ায় সর্দি।
- নাকের স্রাব হাজিয়ে যায়, নাকে ক্ষত হয়। নাক দিয়ে যেন গরম তপ্ত পানি বের হচ্ছে এমন লাগে।
- জেলসের সর্দি ধীরে ধীর বিকাশ লাভ করে।
- মৃদু শীতকালের ঠাণ্ডা-সর্দি ও জ্বরে এটি বেশি লাগে।
- বিরক্তিকর, খুসখুসে কাশি, আগুনের পাশে থাকলে কমে।
- সারা শরীরে ভারবোধ, খুব দুর্বল লাগে।
- পিঠে শীত লাগে, শীত পিঠ বেয়ে উপরে ওঠে আবার নামে।
- মাথাব্যথা।
- ফ্লুর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ওষুধ [ML Tyler]
[৯] Arsenicum album:
- ভারতের AYUSH এ ওষুধটিকে COVID-19 এর প্রতিরোধক ওষুধ হিসেবে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
- নাক থেকে পাতলা স্রাব যায়, ক্ষতকারি স্রাব, উপরের ঠোট হাজিয়া যায়। নাক সময় বন্ধ থাকে, খুব বেশি হাঁচি হয়। হাঁচি দিলেও নাক খোলে না।
- নাকের মধ্যে একটা স্থানে সুড়সুড় করে যেন পালক দিয়ে সুড়সুড়ানি দিচ্ছে। হাঁচির পরও সুড়সুড়ানি কমে না, হাঁচি দিতেই থাকে।
- নাকেই ঠাণ্ডা যেনে আগে লাগে, আবহাওয়ার পরিবর্ততে হাঁচি হয়। প্রথমে নাকে ঠাণ্ডা লাগে এরপর ঠাণ্ডা বুকে যায়।
- আর্স সবসময়ই শীতে কাতর হয়, বাতাসের ঝাপটা সহ্য করতে পারে না।
- ঠাণ্ডায় যেন জমে যায়, যতই কাথা গায়ে দেয় ঠাণ্ডা যায় না। আগুনের কাছ থেকে সরে না। রক্ত যেন বরফের নালি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এমন লাগে।
- নাক জ্বলে, গলা জ্বলে, গরম পানি খেলে জ্বালা কমে।
- জ্বরের সময় শরীর খুব গরম হয়, তখন মনে হয় রক্তের নালি দিয়ে যেন ফুটন্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
- শীতে বাড়ে, মধ্যরাত, দুপুরের রোগ বাড়ে, রাতে বাড়ে, গরমে উপশম, গরম কক্ষে ভাল অনুভব করে।
- অস্থিরতা, ঘন ঘন অল্প পরিমানে পানি পান করে, মৃত্যুভয়।
[১০] Rhus toxicodendron:
-ঠাণ্ডা আদ্র আবহাওয়া থেকে রোগের উৎপত্তি। বিশেষ করে ঘামের সময় যদি ঠাণ্ডা আদ্র আবহাওয়ার সংস্পর্শে যায় তখন ঠাণ্ডা লেগে যায়। (Dulcamara)
- নাসাস্রাব; গলা লাল হয়ে ফুলে যায়।
- প্রত্যেক ঠাণ্ডাতে নাক বন্ধ হয়ে যায়।
- ঠান্ডায় বাড়ে, গরমে কমে।
- গাঢ় হলদে, দুর্গন্ধযুক্ত শ্লেষ্মা স্রাব হয়।
- রাতে, বিশ্রামে বাড়ে, রাতে অস্থিরতা দেখা দেয়, ভয় পায়।
- স্বরভঙ্গ হয়, গলা যেন ছিলে গেছে, খসখসে; কথা বলার শুরুতে বাড়ে কিছু কথা বলার পর স্বরভঙ্গ কমে।
- ঠাণ্ডা পানির পিপাসা, বিশেষ করে রাতে; কিন্তু ঠাণ্ডা পানি খেলে শীত লাগে এবং কাশি দেখা দেয়।
- অনাবৃত থাকলে বাড়ে।
- শরীর ব্যথা, যেন হাড় ব্যথা করে <রাতে, বিকালে; হাচি কাশিও বাড়ে।
[১১] Hepar Sulph:
- শুষ্ক ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে ঠাণ্ডা-সর্দি লাগে (acon,nux v), নাক, কান, গলা, স্বরনালি, বুক থেকে শ্লেষ্মা বের হয়।
- নাকে ঠাণ্ডা, প্রচুর স্রাব, যতবারই ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে যায় ততবারই হাঁচি হয়।
- হাঁচি, নাক থেকে প্রথমে পাতলা পানির মতো স্রাব যায়, পরবর্তীতে স্রাব ঘন, হলদে হয়, দুর্গন্ধ শ্লেষ্মা।
- ঠাণ্ডার সংস্পর্শে গলা বসে যায়, কাশি হয়, নাক দিয়ে ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করলেই বাড়ে, হাত বা পা কাথার বাইরে বের করতে পারে না, বের করলেই কাশি।
- ঘাম বেশি, সারা রাত ঘামে, তাতে কোন উপশম হয় না।
- অতিসংবেদনশীল, স্পর্শ সহ্য হয় না, ব্যথায় রোগী খুব কাতর হয়ে পড়ে, ঠাণ্ডা বাতাস একদম অসহ্য। রুমের দরজা জানলা বন্ধ করে কোন ফাঁকফোকর থাকলে সেটাও বন্ধ করে।
- ঘরের মধ্যে কেউ যদি ঠাণ্ডা প্রবেশ করায় তাকে মারতে চায়।
- আদ্র গরম আবহাওয়ায় ভালবোধ করে।
- ডা: ফেরিংটন এ ওষুধকে রোগের শুরুতে ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন, তাতে নাকের সর্দি চাপা পড়ে বুকে জমে যেতে পারে। যদি ঠান্ডা বুকে জমে যায় তাহলে পরবর্তীতে ফসফরাস ভাল কাজ করে এবং রোগীকে আরোগ্য করে।
[১২] Phosphorus
- একবার নাক থেকে প্রচুর সর্দিস্রাব হয় পরক্ষনেই নাক বন্ধ হয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে এ অবস্থা চলতে থাকে। (নাক্স, পালস)
- গলাব্যথা, মাথাব্যথা, জ্বরজ্বর লাগে।
- নাকের সর্দি শুকিয়ে নাকে চটা পড়ে, সেটা শক্তভাবে নাকের ভিতর আটকে থাকে।
- নাকের একটা ছিদ্র খোলা থাকলে আরেকটা ছিদ্র বন্ধ থাকে।
- হাঁচি দিলে বুকে ও মাথায় ব্যথা করে।
- নাক ঝাড়লে রক্ত আসে, নাক লাল, চকচকে, ব্যথাযুক্ত।
- বুকে চাপবোধ
- শক্ত কাশি, বুক চেপে ধরে, শুষ্ক, যন্ত্রনাপূর্ণ, খোলা বাতাসে বাড়ে।
- ফসফরাসের ঠান্ডা বুক বা স্বরনালি থেকেই শুরু হয়।
- ঠান্ডা পানির পিপাসা, একাকী থাকেতে চায় না, লবন খায়, অন্ধকারে ভুতের ভয়। ঝড়বৃষ্টির ভয়।
[১৩] Pulsatilla:
-সর্দি হাজাজনক নয়, ঘন, হলুদ, নাক ও গলা থেকে নি:সৃত হয়।
- ঘ্রান ও খাবারের স্বাদ পায় না। অথবা মুখ তিতা হয়ে থাকে।
- পিপাসাহীন, ক্ষুধা কম।
- রাতে নাক বন্ধ হয়ে থাকে, সকালে নাক থেকে স্রাব যায়।
- খোলা বাতাসে নাক খুলে যায়, ঘরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। তাই যখনই ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে তখনই খুব শ্লেষ্মা যায়, এবং সন্ধ্যায় বৃদ্ধি।
- নরম স্বভাবের রোগী, ক্রন্দনশীল, সান্ত্বনা চায়, খোলা বাতাস ও সঞ্চালনে উপশম।
[১৪] Sulphur:
- সমস্যা যখন ক্রনিক হয়।
- যাদের নাকে সহজেই প্রদাহ হয়ে সর্দিস্রাব হয়। অবিরাম হাঁচি, নাক বন্ধ।
- নাক থেকে ঘন দুর্গন্ধ স্রাব হয়।
- একোনাইটের রোগী ব্যর্থ হলে সালফার, বা অন্য ওষুধে যখন কাজ না করে তখন এটি মাথায় আনতে হয়।

No comments: